বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

দুই যুগের আক্ষেপ শেষের অপেক্ষা ভারতের

প্রকাশিত - ০৮ মার্চ, ২০২৫   ০২:৪৯ পিএম
webnews24

২৪ঘণ্টা অনলাইন : চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকার ভাগ্যটা আর পরিবর্তন হলোনা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনালে উঠলেও ফাইনালে খেলা হয়নি। নিউজিল্যান্ডের করা ৩৬২ রানের জবাবে ৩১২ রানে থেমেছে প্রোটিয়াদের ইনিংস। আরেকবার ভ্যর্থ হলো টেম্বা বাভুমার দল। ১৯৯৮ সালের পর এবার দ্বিতীয় শিরোপার দেখা পায়নি আফ্রিকার দেশটি। অন্যদিকে ভারতেরও কপাল ভাল নয় এই টুর্নামেন্ট। তাইতো দুই যুগের সেই আক্ষেপ ঘোচাতে পারবে তো ভারত? ২০০০ সাল, কেনিয়ার নাইবোরি। জিমখানা ক্লাব গ্রাউন্ড দর্শকে টইটুম্বুর। ভারতের পক্ষে গলা ফাটাচ্ছিলেন হাজারও সমর্থক। উচ্ছ্বাস জারি থাকল ম্যাচের প্রথম কয়েক ঘণ্টা। শেষ এক ঘণ্টায় নাইবোরির স্টেডিয়ামটিতে পিনপতন নিরবতা। ততক্ষণে ভারতকে নক আউট করে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। সেই দিন থেকে আজ, মাঝে কেটে গেছে দুই যুগ। আইসিসির নক আউট টুর্নামেন্টটির নামে পরিবর্তন এসেছে। বদল এসেছে ফরম্যাটে। ২৫ বছর পর বদলে যাওয়া ক্রিকেটে আবারও দুই প্রতিদ্বন্ধি এক মঞ্চে উপস্থিত।

দুদিন পর দুবাইয়ে কিউইদের বিপক্ষে শিরোপার লড়াইয়ে নামবে ভারত। আক্ষেপ ঘোচানোর কিংবা রোহিত শর্মাদের এবার সেইদিনের বদলা নেওয়ার মঞ্চ। পাকিস্তান ও আরব আমিরাতে বসা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুর্দান্ত ধারাবাহিক ভারত। নিউজিল্যান্ডও দেখাচ্ছে দোর্দন্ত প্রতাপ। তবে এবারের আসরে তারা রোহিতদের কাছেই দেখেছে একমাত্র হার। তাছাড়া কন্ডিশন, শক্তিমত্তা কিংবা পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রেও ভারত এগিয়ে। তবে এই আসরে ভারতকে শিরোপা খরা দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডই। ২০০০ সালের টুর্নামেন্টের হিসাব-নিকাশ ছিল এমন, যারা হারবে তারাই ফিরবে বাড়ি। ভারত শেষ পর্যন্ত টিকে ছিল। কেনিয়ায় বসা টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচেই তারা হারায় স্বাগতিকদের। এরপর সৌরভ গাঙ্গুলিদের কাছে একে একে পরাস্ত হয় অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।

তবে শিরোপার মঞ্চে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। অধিনায়ক সৌরভের সেঞ্চুরির আর শচীন টেন্ডুলকারের ফিফটিতে আড়াইশ ছাড়ানো সংগ্রহ পায় ভারত। দারুণ লড়াইও চালায়। কিন্তু সব মাটি করে দেন ক্রিস কেয়ার্নস। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করেই ১৬৪ রানের লক্ষ্য টপকে যায় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। সেই হারের ক্ষত এখনও তরতাজা। যদিও ভারত ২০১৩ সালে এই টুর্নামেন্ট জিতেছিল। তবে বদলা নেবার সুযোগ এবার। এবার রোহিত শর্মারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। নাইবোরি আর ফিরতে দিতে চান না মোহাম্মদ শামি-বিরাট কোহলিরা। আট জাতির টুর্নামেন্ট নেমেছে দু’দলের লড়াই। এবার যারা জিতবে, তাদের হাতেই ‍উঠবে শিরোপা। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম প্রস্তুত। প্রস্তুত রোহিত ব্রিগেডও। তাদের রুখতে প্রত্যয়ী মিচেল স্যান্টনারের দলও। পঞ্চাশ ওভারের লড়াইয়ের যা অপেক্ষা।

সে হিসেবে বলা যায়, ৯ মার্চ বদলা কিংবা আক্ষেপ বাড়ানোর দিন। এদিকে আরও একটাবার দলের বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে গেলেন ডেভিড মিলার। তবে মিল ওই এক জায়গায়। বরাবরের মতোই ব্যর্থ হলো তার দল। চোকার্স তকমাটা মোছা গেল না দক্ষিণ আফ্রিকার পাশ থেকে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুতগতির শতক হাঁকিয়েও তাই ডেভিড মিলার হয়ে গেলেন উপন্যাসের ট্র‍্যাজিক হিরো। নিউজিল্যান্ডের দেয়া ৩৬৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা থামল ৫০ রান আগে। আর তাতে বৃথা গেল ডেভিড মিলারের ৬৭ বলে ১০০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসটা। ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালেও ছিল তার দুর্দান্ত এক শতক। সেবারেও হারের কষ্টটাই সঙ্গী হয়েছিল মিলারের। আর এখানেই দুর্ভাগ্যের এক বিশ্বরেকর্ড গড়লেন মিলার।

আইসিসির ওয়ানডে ইভেন্টে নকআউট ম্যাচে দুবার সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। আর দুইবারেই হেরেছে দল। আর কোনো ক্রিকেটারের দুইবার সেঞ্চুরি করে, দুইবারই বিদায় নেয়ার ভাগ্যবরণ করতে হয়নি। অবশ্য দুর্ভাগ্য বিবেচনায় ডেভিড মিলার পাশে পাচ্ছেন শ্রীলঙ্কান গ্রেট সনাৎ জয়সুরিয়াকে। আইসিসি ইভেন্টে নকআউট ম্যাচে দল হেরে গেলেও ৩বার করে দলীয় সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন জয়সুরিয়া এবং মিলার। পুরো দলের সাপেক্ষে এমন দুর্ভাগা রেকর্ড কেবল এই দুজনেরই। অবশ্য ক্রিকেটের এই মঞ্চে ৬৭ বলে সেঞ্চুরি করে অন্য রেকর্ডও জুটেছে ডেভিড মিলারের। আইসিসির নকআউট পর্বেও ম্যাচে কমপক্ষে ৩০০ রান করেছেন এমন খেলোয়াড়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গড় প্রোটিয়া এই ব্যাটারের। বুধবারের ইনিংসের পর নকআউট ম্যাচে তার গড় ১৫৩! এরপরেই আছেন পাকিস্তানের সাঈদ আনোয়ার। তার গড় ১২৮.৩৩। আর কোনো ব্যাটারেরই ১০০ এর বেশি গড় নেই এই মঞ্চে। সেঞ্চুরিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরিটাও নিজের করে নিয়েছেন মিলার। পেছনে ফেলেছেন জশ ইংলিশ এবং বীরেন্দ্রর শেবাগকে। চলতি আসরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা জশ ইংলিশ করেছিলেন ৭৭ বলে সেঞ্চুরি। আর শেবার তার সেঞ্চুরিটা পেয়েছিলেন ২০০২ আসরে, ইংল্যান্ডেরই বিপক্ষে। 
২৪ঘণ্টা/আসো

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন