২৪ঘণ্টা অনলাইন : মহাবিশ্বের একটি ক্ষুদ্র অংশ আমাদের গ্রহ পৃথিবী। এই পৃথিবীতেও লুকিয়ে আছে বহু রহস্যময় স্থান। সেগুলি নিয়ে বহু গবেষণা করেও বিজ্ঞানীরা কোনও কুলকিনারা করতে পাননি। সেই সব জায়গার কথা শুনলে আধুনিক যুগের মানুষও চমকে ওঠেন। চলুন আজ তা হলে কয়েকটি রহস্যময় জায়গা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
লাওসের জিয়াংখোয়াং মালভূমি
লাওসের জিয়াংখোয়াং মালভূমির চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে প্রাচীন পাথরের তৈরি হাজার হাজার জার কিংবা পাত্র। সেগুলির কোনও কোনওটির আবার ঢাকনাও রয়েছে। এক একটি পাত্রের আকার বিশাল। ইন্দোচিনের প্রধান পর্বতমালা অ্যানামিস কর্ডিলেরার উত্তর প্রান্তে অবস্থিত জিয়াংখোয়াং মালভূমি। জারের উচ্চতা ও ব্যাস মোটামুটি ১ থেকে ৩ মিটারের মধ্যে। ইতিহাস বলছে, একটা সময় সেখানকার রাজা ছিলেন খুন চেউং। যুদ্ধজয় উদযাপনের উদ্দেশ্যে তিনি এই পাত্রগুলি তৈরি করেন। এই পাত্রে নাকি মদ সংরক্ষণ করে রাখা হতো। তবে গবেষকেরা এই বিশাল পাত্রগুলির কোনও ব্যাখ্যাই দিতে পারেননি।
ইটার্নাল ফ্লেম ফলস পশ্চিম নিউ ইয়র্ক
ইটার্নাল ফ্লেম ফলস পশ্চিম নিউ ইয়র্কের চেস্টনাট রিজ় পার্কের একটি অংশ, শেল ক্রিক প্রিজ়ার্ভে অবস্থিত জলপ্রপাত। ৩৫ ফুট উঁচু জলপ্রপাতের পাদদেশে একটি ছোট গুহায় যুগযুগ ধরে আগুন জ্বলছে। প্রায় সারা বছরই সেই আগুন জ্বলে। কোনও কারণে নিভে গেলে, তা ফের জ্বালিয়ে দেওয়া যায়। সম্ভবত, প্রাকৃতিক গ্যাসের কারণে সেখানে আগুনের শিখা তৈরি হয় বলে অনেকে মনে করেন। গবেষকরা জলপ্রপাতের এলাকায় আরও অসংখ্য ‘মাইক্রো সিপ’-এর অস্তিত্ব লক্ষ্য করেছেন। যদিও প্রাকৃতিক গ্যাস নির্গত হওয়ার ব্যাপারটি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।
কেভ অফ ক্রিস্ট্যালস, মেক্সিকো
২০০০ সালে দু’জন খনি শ্রমিক অপ্রত্যাশিতভাবে মেক্সিকোর স্ফটিকের গুহাটি আবিষ্কার করেন। চুনাপাথরের তৈরি এই গুহার আকৃতি ঘোড়ার নালের মতো। এর মেঝে নিখুঁতভাবে স্ফটিকের ব্লক দিয়ে ঢাকা। ব্লক ও মেঝে উভয় থেকেই বিরাট বিরাট স্ফটিক রশ্মি বেরিয়ে এসেছে।
স্টোন স্ফিয়ার্স, কোস্টারিকা
কোস্টারিকার ডিকুইস ডেল্টা ও ইসলা ডেল ক্যানোতে রয়েছে ৩০০টিরও বেশি পাথরের গোলক। কোস্টারিকাতে কলা চাষের জন্য নতুন জমি প্রস্তুত করার সময় একদল শ্রমিক এই প্রায় নিখুঁত, গোলাকার পাথরের খোঁজ পান। স্থানীয়রা সেগুলিকে বোলাস ডি পাইড্রা (অর্থাৎ, পাথরের বল) নামেও পরিচয় করায়। এই গোলকগুলির আকার কয়েক সেন্টিমিটার থেকে শুরু করে ২ মিটার ব্যাসেরও বেশি এবং ওজন ১৫ টন পর্যন্ত। পাথরগুলো ৬০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে তৈরি করা হয়, যার বেশিরভাগই তৈরি হয় ১০০০ সালের পরে। যদিও খোদাই করা পাথরগুলির বয়স আজও অজানা।
ফেয়ারি সার্কলস, নামিবিয়া
দক্ষিণ আফ্রিকার নামিব মরুভূমির তৃণভূমি জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রহস্যময় ‘পরীর বৃত্ত’। যুগযুগ ধরে গবেষণা করেও বিজ্ঞানীরা সেগুলির রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেননি। প্রত্যেকটি বৃত্তের মধ্যে দূরত্ব সমান। এই পরী বৃত্তগুলিতে স্টিপাগ্রোস্টিস প্রজাতির বিশেষ ঘাস উৎপন্ন হয়। সেই অংশটুকু একেবারে শুষ্ক। গবেষণায় দেখা গেছে যে, বৃত্তের মধ্যে গজানো ঘাসগুলি প্রায় ৩০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
২৪ঘণ্টা/আসো