দর্পণ কবীর, নিউইয়র্ক : এ বছর ১৪ এপ্রিল বাংলা বর্ষ ১৪৩২কে বরণ করা নিয়ে নিউইয়র্কে বেশ কয়েকটি সংগঠন অনুষ্ঠান করার ঘোষণা দিয়েছে। অনুষ্ঠান আয়োজনের চলছে জোর প্রস্তুতি। তবে ১৪ এপ্রিলের আগের দুদিন এবং পরের সপ্তাহের ছুটির দিনে (শনি ও রোববার) বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন। বাংলা সনের প্রথম দিনে (১৪ এপ্রিল) অনুষ্ঠান কেন নয়-এমন প্রশ্ন অনেকের। এবার বাংলাদেশি কমিউনিটিতে আলোচনা হচ্ছে ‘নিউইয়র্ক বাংলাদেশ সোসাইটি’র ১৩ এপ্রিল ডে প্যারেড করার ঘোষণা নিয়ে। আলোচনায় সরব প্রবাসীরা। প্রশ্নও উঠেছে বাংলাদেশ সোসাইটির ‘ডে প্যারেড’ আয়োজনের প্রক্রিয়া ও কারণ নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে, একটি সংগঠনের (ডে প্যারেড-এর অনুমতি পত্র প্রাপ্ত) ছায়াতলে বাংলাদেশ সোসাইটিকে ‘ডে প্যারেড’ করতে হবে কেন এবং বাংলাবর্ষ বরণের অনুষ্ঠান না করে শুধুমাত্র ‘ডে প্যারেড’ করার কারণ কি? এ ছাড়া যে স্থানে পৃথ
ক দুটি সংগঠন বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র আয়োজন করতে যাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ সোসাইটি (প্রায় একই সময়) কেন ‘ডে প্যারেড’ করতে যাচ্ছে-এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক শহরের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় ১৩ এপ্রিল বিকেলে ’মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও ’ডে প্যারেড’ করার ঘোষণা দিয়েছে পৃথক পৃথক সংগঠন। সংগঠন দুটি হল এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড এবং সম্মিলিত বর্ষবরণ মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপন পরিষদ।
বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান নিউইয়র্ক শহরে প্রথম চালু করে ড্রামা সার্কল নামে একটি সাংস্কৃতিক ও নাট্য সংগঠন। এই সংগঠনের নেত্রী নার্গিস আহমেদ প্রথম বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পান্তা ভাতা ও ইলিশ মাছ পরিবেশন করে কমিউনিটিতে সাড়া জাগান। বিগত বেশ কয়েক বছর যাবত আরো অন্যান্য সংগঠন বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করে আসছে।
২০২৩ সালে এনআরবি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড নামে একটি সংগঠন ম্যানহাটানের টাইমস স্কোয়ের ভোরের আলোয় বাংলা বর্ষবরণ করে চাঞ্চলের সৃষ্টি করে। ঐ বছর রমজান মাসে বর্ষবরণ করতে গিয়ে কট্টর মোল্লাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখ পড়েছিল সংগঠনটি। কিন্তু সাধারণ প্রবাসীদের অংশগ্রহণে টাইমস স্কোয়ার এবং পরেরদিন জ্যাকসন হাইটসে ‘গণ জোয়ার’ সৃষ্টি হয়েছিল। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিকস এডাম এসেছিলেন জ্যাকসন হাইটসের অনুষ্ঠানে। এরপর এ বছর নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য (স্টেট সিনেট) থেকে ১৪ এপ্রিল দিবসটিকে ‘বাংলা বর্ষবরণ দিবস’ ঘোষণা করা হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও কষ্টির চর্চার জন্য অনন্য এক মাইলফলক। অথচ প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র কর্মকর্তারা বাংলা বর্ষণ নিয়ে কোন অনুষ্ঠান করার ঘোষণা এখনও দেয়নি।
২৪ঘণ্টা/আসো