শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১

ব্যাটাররা ভাল খেললেই জিততে পারে বাংলাদেশ

প্রকাশিত - ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫   ০৩:৪৪ পিএম
webnews24

২৪ঘণ্টা অনলাইন : বাংলাদেশের ক্রিকেটে বড় সমস্যার নাম ব্যাটিং। টেস্ট আঙ্গিনায় পা রাখার আগে থেকেই এই সমস্যা রয়েছে টাইগার ক্রিকেটে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে এই ব্যাটারদের ব্যর্থতার কারণেই যেভাবে আত্মসমর্পণ করেছেন শান্ত-মিরাজরা, রাওয়ালপিন্ডিতে পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিশ্চয়ই তার পুনরাবৃত্তি চাইবেন না তাঁরা। সোমবার ব্যাটিং ‘দুর্ঘটনা’ যাতে না হয় সে বিষয়ে সদা সতর্ক থাকার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ, দলীয় সুত্রে এমনটাই জানা গেছে। মূলত ব্যাটাররা ভাল করলেই কেবল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়েল স্বপ্ন দেখতে পারে লাল সবুজের দলটি। ইসলামাবাদে ২২-২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাংলাদেশ দলের কাছে আহামরি কোনো ‘ঠান্ডা’ মনে হওয়ার কথা নয়। বরং রৌদ্রকরোজ্জ্বল আবহাওয়ায় এমন ঠান্ডা কন্ডিশন বরং উপভোগ্য মনে হচ্ছে খেলোয়াড়দেও কাছে। ইসলামাবাদ ক্লাবে অনুশীলনের ফাঁকে বিসিবির নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, এমন কন্ডিশন তাদের কাছে মোটেও অচেনা নয়। যে রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশ খেলতে নামছে, সেটি তাদের কাছে যথেষ্ট পয়া ভেন্যু।

গত আগস্টে এখানেই পাকিস্তানকে টেস্টে ধবলধোলাই করেছিল বাংলাদেশ। সেই সাফল্য থেকে বাংলাদেশ যতই অনুপ্রেরণা খুঁজুক, দুর্দান্ত ছন্দে থাকা প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে তৈরি। কিউই-চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আগে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের ভুল আগে ঠিক করতে হবে। দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে নিমেষে অদৃশ্য হয়ে গেছে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশের পরে মান বাঁচিয়েছে তাওহীদ হৃদয় আর জাকের আলীর অনবদ্য ব্যাটিং। তাতেও বড় স্কোর গড়া যায়নি। বাংলাদেশও ম্যাচটা জিততে পারেনি। প্রশ্ন উঠেছে মুশফিকুর রহিমের ফর্ম নিয়েও, যিনি ভারতের বিপক্ষে ফিরেছেন শূন্য রানে। রাজ্জাক অবশ্য মুশফিককে নিয়ে চিন্তিত নন রাজ্জাক, ‘কেন চিন্তার বিষয় হবে? একটা ম্যাচ খারাপ করেছে, এটা যে কারও হতে পারে। এটা মুশফিক, তাওহীদ হৃদয়, শান্ত, জাকের আলী, যে কারও হতে পারে। একজনের পারফরম্যান্স নিয়ে মনে হয় না চিন্তার বিষয় হবে আমাদের কাছে।’

 মুশফিককে নিয়ে চিন্তা না করলেও প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে নিশ্চয়ই যথেষ্ট ভাবতে হবে। কিউইরা আছে আবার উড়ন্ত ফর্মে। কদিন আগে পাকিস্তানকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে উড়ন্ত শুরু হয়েছে তাদের। সে কারণেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাাহ রিয়াদ নাকি মুশফিক খেলবেন সেটা ম্যাচের আগেরদিন নিশ্চিত করা যায়নি। নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়ার আগে ভারতের বিপক্ষে পায়ের ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি রিয়াদ। আর রাওয়ালপিন্ডিতে তাকে দলে ফেরানোর ভাবনাও রয়েছে। জাকের আলি অনিক ব্যাট হাতে নিজেকে প্রমাণ করেছেন ভারতের বিপক্ষে ভরাডুবির সেই ম্যাচে। অন্যদিকে মুশফিকুর রহিম ব্যাট হাতে করেছিলেন গোল্ডেন ডাক। এছাড়া তাওহীদ হৃদয়ের সেঞ্চুরির ফলে ভারতের বিপক্ষে ২২৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। তবে প্রশ্ন হচ্ছে রিয়াদ দলে ফিরলে বাদ পড়বেন কে। গুঞ্জন রয়েছে মুশফিককেই জায়গা ছাড়তে হতে পারে।

এদিকে সেদিন রিয়াদের ব্যাটে সর্বনাশ দেখেছিল কিউইরা সেটিও সামনে চলে এসেছে। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ৬ উইকেটের বিশাল হারে এখন বেকায়দায় শান্তরা। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে কিউইদের হারাতেই হবে। হেরে গেলে বিদায়ের রাগিণী বাজার সম্ভাবনা বেশি। এমন সমীকরণ মাথায় মাঠে নামার আগে চাইলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা একটি ম্যাচে হাইলাইটস দেখতে পারেন। তাতে আত্মবিশ্বাস যেমন বাড়বে, তেমনি কিউইদের হারানোর দুয়েকটি টোটকাও মিলে যেতে পারে। সে ম্যাচটি আট বছর আগের, এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিরই। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। টস জিতে আগে ব্যাট করে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৬৫ রান তোলে কিউইরা। ১৩ রান ৩ উইকেট শিকার করেন স্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সে রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটারদের উল্টো সাজঘরে ফেরার জন্য তাড়াহুড়ো শুরু করেন। তাতে ১১.৪ ওভারে ৩৩ রান তুলতেই ৪ উইকেট খুইয়ে বসে বাংলাদেশ। লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের তখন বড় ব্যবধানে হার চোখ রাঙাচ্ছে। কিন্তু দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তাদের ব্যাটের ভাষায় কিউইদের বলে দেন নট টুডে।

পঞ্চম উইকেটে ২২৪ রানের এক মহাকাব্যিক জুটি গড়েন তারা দুজন। সাকিব আল হাসানের ব্যাটে আসে দলীয় সর্বোচ্চ ১১৪ রান। আর মাহমুদউল্লাহ যখন দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তখন তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করে ১০২ রান। সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে সেদিন কিউই বোলারদের কচুকাটা করেন রিয়াদ। অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে চার-ছক্কা মিলিয়ে ১০ বার বল সীমানাছাড়া করেন। এর মধ্যে ৮টি ছিল চার ও দুটি বিশাল ছক্কা। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতির মানসপটে এখনো উজ্জ্বল মাহমুদউল্লাহর সে দাপুটে ইনিংস। সে দলের অনেকেই আর এখন জাতীয় দলের সঙ্গে নেই। অধিনায়ক মাশরাফি বা মাহমুদউলল্লহর সেই মহাকাব্যিক জুটির সঙ্গী সাকিব এখন দল থেকে অনেক দূরে। কিন্তু ৩৯ বছর বয়সি মাহমুদউল্লাহ এখনো খেলে যাচ্ছেন। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে পেশিতে চোট পান মাহমুদউল্লাহ। সেজন্য ম্যাচটি মিস করতে হয়েছে তাকে। পরের ম্যাচ সেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। জয় ছাড়া সেমিফাইনালে যেতে কোন বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে।
২৪ঘণ্টা/আসো

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন