২৪ঘণ্টা অনলাইন : বাংলাদেশের আপিল বিভাগ ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জনের চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ৯০ দিনের মধ্যে এই ১,১৩৭ জনকে চাকরিতে নিয়োগ দিতে হবে।
এই মামলার শুনানিতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন এবং অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। মামলার পটভূমি অনুযায়ী, ২০০৭ সালে ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩,৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। কিন্তু তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ওই বছরের ৩০ মে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেয়, যাতে ৩,২২৯ জন উত্তীর্ণ হন এবং তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। হাইকোর্ট প্রথমে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন, কিন্তু পরে আপিল বিভাগ ২০১০ সালে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা বৈধ বলে রায় দেন। নিয়োগবঞ্চিতরা এই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এখতিয়ারের বাইরে ছিল। এছাড়া, পিএসসি আইন ও বিধিতে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার কোনো বিধান নেই।
আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন জানান, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন এবং নিয়োগবঞ্চিত ১,১৩৭ জনকে ৯০ দিনের মধ্যে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এই রায়ের মাধ্যমে ১৭ বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটল। নিয়োগবঞ্চিতরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেয়ে আনন্দিত হলেও, এখন তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হবে কিনা, তা দেখার বিষয় রয়ে গেছে।
এই মামলাটি বাংলাদেশের বিসিএস পরীক্ষা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
২৪ঘণ্টা/আসো