বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

অনলাইনে রেলটিকিট নাগাল পায় না মানুষ

প্রকাশিত - ১৩ মার্চ, ২০২৫   ০৫:২২ পিএম
webnews24

২৪ঘণ্টা অনলাইন : সরকারের গণপরিবহন ট্রেন ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। অনলাইনভিত্তিক টিকিট বিক্রির বর্তমান যে ব্যবস্থা, তাতে দেশের মাত্র ৫২ লাখ মানুষ ট্রেনের টিকিট কাটতে পারছে। এতে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে টিকিটি বিক্রির দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। একটি টিকিট বিক্রির বিনিময়ে ঠিকাদার এখন পাচ্ছে সাড়ে ছয় টাকা।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে ২০২৩ সাল থেকে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম পুরোপুরি অনলাইনকেন্দ্রিক করে ফেলা হয়। এখন প্রায় ৭১ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয় অনলাইনে। বাকি যে ২৯ শতাংশ টিকিট কাউন্টারে বিক্রি হয়, এর প্রায় সবই কম গুরুত্বপূর্ণ। তবে সব মিলিয়ে অপেক্ষাকৃত কম আয়ের কিংবা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য রেলের টিকিট কাটা কঠিন হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে রেলের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে আছে যৌথভাবে সহজ ডটকম-সিনেসিস-ভিনসেন। প্রতি টিকিট বিক্রির বিনিময়ে তারা ২৫ পয়সা নেবে—এই শর্তে দায়িত্ব পায়। আর অনলাইনে টিকিট বিক্রির জন্য তাদের চার্জ হিসেবে সাড়ে ছয় টাকা পাওয়ার কথা ছিল আগের নিয়ম অনুযায়ী। 

রেলের টিকিট বিক্রির ব্যবস্থাটির নাম বাংলাদেশ রেলওয়ে ইন্টিগ্রেটেড টিকেটিং সিস্টেম (বিআরআইটিএস)। এই ব্যবস্থা চালুর পর ট্রেনের টিকিট পেতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে প্রথমে নিবন্ধন করতে হয়। এরপরই অনলাইনে (মোবাইল অ্যাপ ও ওয়েবসাইট) টিকিট কাটা যায়। গত অক্টোবর পর্যন্ত ৫২ লাখ ৫৫ হাজার ৯১০ জন নিবন্ধন করেছেন। টিকিটের নিবন্ধন করতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে রেলসেবা অ্যাপ বা রেলের ওয়েবসাইটে নানা তথ্য জমা করতে হয়। ট্রেনের টিকিট শেষ দুই মিনিটেই, এ কেমন ডিজিটাল সমাধান?

রেলের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনলাইনে টিকিট বিক্রি বৃদ্ধির পর কালোবাজারি বন্ধ হয়নি। দক্ষ কালোবাজারিরা সাধারণ যাত্রীদের চেয়ে দ্রুত টিকিট কাটার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে। তাই অনলাইনে ‘এক মিনিটে টিকিট শেষ’—এমন অভিযোগ সর্বত্র। অনলাইনে কেনা টিকিটের জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে বাড়তি ২০ টাকা নেওয়া হয়। এর মধ্যে সহজ পাচ্ছে সাড়ে ছয় টাকা। আরও সাড়ে ছয় টাকা যায় যে ব্যাংকিং গেটওয়ের মাধ্যমে দাম পরিশোধ করা হয়, সেই প্রতিষ্ঠানে। সরকার ভ্যাট হিসেবে পায় তিন টাকা। বাকি চার টাকা রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের। রেলে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হয়েছে, সে হারে যাত্রী পরিবহণের সক্ষমতা বাড়েনি। কেন বাড়েনি এই জবাবদিহি করতে হবে। সক্ষমতা বাড়ালে কালোবাজারি বন্ধে এত কিছুর দরকার হবে না। অনলাইনে টিকিট কাটতে খরচ কম হওয়ার কথা। বাড়তি টাকা নেওয়া হলে তা অবশ্যই অনিয়ম।

২৪ঘণ্টা/আসো

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন